Headlines

দুধের ব্যবসা করতে চান? কিভাবে শুরু করবেন? বিক্রি কিভাবে করবেন, রইল যাবতীয় খুঁটিনাটি

আমার বাংলা ডেস্ক : আজই শুরু করুন দুধের ব্যবসা, লাভ জানলে মাথা ঘুরে যাবে আপনাদের! এই দুধের ব্যবসায় প্রতিদিন ৭৫০০ টাকা আয় করা খুবই সহজ বিষয়। সবসময় যে বড় ব্যবসা বা চাকরী করতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনারা যদি ঘরে বসে খুব সহজেই ছোটো খাটো ব্যবসা করেও ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ভারতে দুধের চাহিদা প্রচুর । সকালে ঘুম থেকে উঠে চা থেকে শুরু করে রাতে খাওয়ার পর আইসক্রিম বা মিষ্টি সব কিছুতেই দুধের প্রয়োজন হয়। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাজারে দুধের চাহিদাও সব সময় উর্ধমুখি থাকে। আগেকার দিনে গরু, মহীষের দুধ বিক্রিই করে মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে ওঠে।
দুধের ব্যবসা শুরু করতে প্রাথমিক ভাবে কত টাকা লাগবে ?

দুধের ব্যবসায় নামার আগে আপনাদেরকে দ্বিতীয় যে বিষয়ের উপর নজর দিতে হবে তা হল- কত টাকা এই ব্যবসায় ইনভেস্ট করতে হবে। বর্তমানে ছোটো মাঝারি ব্যবসায় কম টাকা বিনিয়োগ করে প্রচুর পরিমানে লাভ করা সম্ভব। দুধের ব্যবসা শুরু করতে গেলে ৭ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে হতে পারে। ডেয়ারিতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ টি মহিষ রাখতে হবে। সরকারের তরফ থেকে দুধের ব্যবসার জন্য ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হয়। ভর্তুকি নিতে ইচ্ছুক ব্যবসায়ীগণ রাজ্যের দুগ্ধ সমবায় সমিতি সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

দুধের ব্যবসা শুরু করতে কোন ধরণের মহিষ পালন করবেন ?

দুধের ব্যবসা শুরু করার আগে ভালো জাতের মহিষ সর্ম্পকে জানতে হবে। কোন ভালো জাতের মহিষ পালন করলে দুধ বেশি পাওয়া যাবে সেদিকে নজর দিতে হবে। কারন ভালো জাতের মহিষ পালন করলেই বেশি পরিমানে দুধ পাওয়া যাবে।

মুররা জাতের মহিষ :

মুররা জাতের মহিষ শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের বহু দেশেই জনপ্রীয়। এই মহিষ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ২০ লিটার দুধ পাওয়া যায়। দুধের ব্যবসা শুরু করার জন্য এই মহিষ খুবই উপযোগী। এই জাতের মহিষ পালন করতে বেশি টাকা খরচও করতে হয় না। উল্টো দিকে প্রতিদিন গড়ে ১৫ লিটার দুধ দিলে মাসে ৪৫০ লিটার দুধ পাওয়া যাবে। বছরে ৫ হাজার চারশো ৭৫ লিটার দুধ পাওয়া সম্ভব।

শুরু করতে কি প্রয়োজন?

 দুধের জার:

বিশেষ পদ্ধতি তৈরি জার খুবই দরকার। এই জারের সাহায্যে দুধ খুব সহজেই পরিবহন করা যায়। এতে দুধ নষ্ট হওয়ার সম্ভবনাও কম থাকে।

একটি ছোট গাড়ি অথবা একটি বাইসাইকেলঃ
গাড়ি অথবা বাইসাইকেল থাকলে আপনি নিজেই অন্য খামার বা গ্রাম থেকে দুধ সংগ্রহ করে এনে সরাসরি গ্রাহকদের নিজেই সাপ্লাই দিতে পারবেন ।

দুধ মাপার পট বা স্কেলঃ

দুধ পরিমাপ করার ক্ষেত্রে দুধ মাপার পোয়াতো আবশ্যক। সুতরাং এইটা অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে তাতে করে গ্রাহকদের দৃষ্টি ভঙ্গী আপনার প্রতি যথেষ্ট পজিটিভ থাকে। এতে আপনার বিজনেসের আরও বৃদ্ধি হবে।

কিভাবে শুরু করবেন?

ব্যবসাটি শুরু করার আগে অবশ্যই এর বাজার সম্পর্কে ধারণা রাখা দরকার। সাধারণত গ্রামের দিক থেকে গরুর দুধ কিনলে আপনি খাঁটি এবং ভেজাল মুক্ত পাবেন, কারণ সেখানের খামারিরা বা গরু পালন কারীরা গরুর খুবই যত্ন নেয় আর তাদেরখাদ্যর বিষয়েও খুব খেয়াল রাখে। বেশির ভাগ গরু পালন কারি তাদের গরুকে সবুজ ঘাস মাঠ থেকে তুলে এনে খাওয়ায়, যার ফলে ভালো দুধ পাওয়া যায়, যেটা শহরের গরুদের মধ্যে সাধারণত পাওয়া যায়না। তাই কোথায়  গরুর খাঁটি দুধ পাওয়া যায়, সে খোঁজখবর রাখা জরুরি। একেক জায়গায় একেক দামে পাওয়া যায়, তাই সব জায়গা নখদর্পণে রাখুন। লিটারে

কত টাকা মুনাফা করবেন, আপনি কত টাকায় বিক্রি করবেন এসব হিসাব ঠিক করে নিন। এরপর জনবহুল এলাকা বেছে নিন, যেখানে এই ব্যবসাটি শুরু করবেন। যত বেশি গ্রাহক পাবেন আপনি তত বেশি আপনার বিক্রি বাড়াতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং কিভাবে করবেন? 

আপনি যদি আপনার বিজনেস পরিধি  বৃদ্ধি করতে চান বা যদি ডিলার হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারেন, এক্ষেত্রে আপনার একটা স্মার্টফোণ দরকার হবে। কিছু ওয়েব সাইটে গিয়ে আপনার বিজ্ঞাপন দিতে হবে।তাছাড়াও আপনি আপনার বিজনেসের পরিধি বাড়াতে কিছু লিফলেট ছাপিয়ে বিতরণও করতে পারেন। অথবা এলাকায় মাইকিং করেও ক্রেতাতেরআকৃষ্ট করতে পারেন। শরীর ও মনের জন্য একটি আদর্শ খাবার হচ্ছে দুধ।

প্রচলিত মার্কেটিং কিভাবে করবেন? 

যদি আপনি প্রচলিত মার্কেটিং করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছু দই বানানোর কারিগরদের সাথে কথা বলে আপনার গরুর দুধের গুনগতমান ভালো সেটা তাদের বুঝিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্ডার নিয়েগরুর দুধের সাপ্লাই দিতে পারেন। এতে আপনি অল্প পরিশ্রমে অধিক বিক্রির সুবিধা পাবেন।

কী সতর্কতা অবলম্বন করা কি জরুরী? 

  • সবসময় লক্ষ রাখবেন, যেখান থেকে দুধ কিনছেন, সেখানকার দুধের মান যেন ভালো হয়। চেষ্টা করবেন গ্রাম থেকে কিনে শহরে নিয়ে যাওয়ার, কেননা তুলনা মুলক ভাবে শহরের খামারের দুধের থেকে গ্রামের দুধের মান অনেক টাই ভালো পাওয়া যায়। দুধে কোনোভাবেই জল
  • মেশানো যাবে না, এতে করে আপনি হয়ত সাময়িক লাভ করতে পারবেন কিন্তু বেশির ভাব গ্রাহক–ই আপনি হারাবেন।সুতরাং এমন কাজ ভুলেও করা যাবেনা।
  • দুধ কখনো রেফ্রিজারেটরে রাখবেন না। কারন এতে করে দুধের গুনগত মান নষ্ট হয়ে যায়। সব সময় তাজা দুধ দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে গ্রাহকের আগ্রহ বাড়বে আপনারও বিক্রি বেশি হবে।

Leave a Reply