Headlines

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লোন পাবেন ১০ লক্ষ টাকা! জানুন কিভাবে করবেন আবেদন

আমার বাংলা ডেস্ক : বিরাট সুযোগ ছাত্রছাত্রীদের জন্য। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নামের এই বিশেষ ধরনের ক্রেডিট কার্ড লঞ্চ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই প্রকল্পটি লঞ্চ করার পেছনে মুখ্য উদ্দেশ্য হলো – পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) সেই সমস্ত ছাত্র ছাত্রীরা যারা স্কুলে যেতে চায়। কিন্তু পড়াশুনা করার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা পয়সা নেই। তো এই প্রকল্পটি এই সমস্ত সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করবে। যাতে করে ভবিষ্যতে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য এই অর্থ যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছাত্র ছাত্রীদের তাদের ভবিষ্যতের পড়াশোনার জন্য এই বিশেষ ক্রেডিট কার্ডটি ব্যবহার করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ধার বা লোন পাওয়ার অনুমতি দেয়। আর এই ঋণের গ্যারান্টি খুব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন, যার মানে যদি ছাত্র ছাত্রীরা এই লোন রিপেমেন্ট না করতে পারে তবে এই লোনের টাকা সরকার ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়েছে। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ঋণটি শিক্ষার্থীকে সফল করতে সাহায্য করার জন্য পরীক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মতো জিনিসগুলি কেনার জন্য সাহায্য করবে। সহজ কথায়, শিক্ষার্থীরা তাদের স্কুলের ফি, তাদের ক্লাসের খরচ, এমনকি কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মতো জিনিসগুলি কেনার জন্য এই কার্ডটি থেকে লোন নিতে পারবে। আর ছাত্র ছাত্রীরা 40 বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত এই কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবে।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের কী কী সুবিধা রয়েছে?

• এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর এবং এর সমপরিমাণ ডিগ্রি কমপ্লিট করার জন্য আপনি লোন নিতে পারবেন।

• এবং এই লোনের টাকা বা ক্রেডিট কার্ডটি ভারতে অথবা বাইরে যেকোনো কলেজে একসেপ্টেবল হবে।

• আপনি যেই যেই সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশুনা করার জন্য লোন পাবেন – সেগুলো হলো – আইন, আইএএস, আইপিএস, ডব্লিউবিসিএস, ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল ডিগ্রি ইত্যাদি।

• যারা কোনো কলেজ বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা করছেন না, শুধুমাত্র কোচিং সেন্টারে এই সমস্ত ডিগ্রির কোচিং করছেন, তারাও লোন নিতে পারবে।

• এই প্রকল্পের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র ছাত্রীরা সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবে।

• রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক এবং এর অধিভুক্ত কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক এবং জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক এবং পাবলিক/প্রাইভেট সেক্টর ব্যাঙ্কগুলি থেকে ১০ লক্ষ টাকার ৪% বার্ষিক সরল সুদে লোনটি নিতে পারবেন।

• যদি এই লোনের টাকা শিক্ষার্থীরা ডিগ্রি কমপ্লিট করার সাথে সাথেই রিপেমেন্ট করতে পারে, তাহলে সরকার এই লোনের উপরে আরো ১% চার দিবে।

• এই ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে শিক্ষার্থীদের জন্য বয়সের ঊর্ধ্বসীমা চল্লিশ বছর রাখা হয়েছে।

• এই ক্রেডিট কার্ডের অধীনে লোন রিপেমেন্ট করার লাস্ট সময়কাল হবে ১৫ বছর।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা কী কী?

• স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে শিক্ষার্থীকে ক্লাস ১০ বা তার উপরে যেকোনো কোর্স বা ডিগ্রিতে অধ্যায়নরত থাকতে হবে।

• এই কার্ডটি শুধু তারাই পাবে যারা গত ১০ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। (পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছে।)

• এই কার্ডটি এপলাই করার জন্য আবেদনকারীর বয়স ৪০ বছরের নিচে থাকতে হবে।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কী কী নিয়ম রয়েছে?

• স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডটি এই সমস্ত কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। যেমন – কোর্স ফি বা সেমেস্টার ফি, টিউশন ফি, হস্টেল ফি, এছাড়াও ছাড়াও শিক্ষামূলক ভ্রমণ, প্রজেক্ট বা থিসিস সম্পূর্ণ করতে যা খরচ লাগবে।

• কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত মোট ঋণের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

• এই কার্ড টি থেকে ২০ শতাংশ টাকা বসবাসের জন্য খরচ করা যাবে।

• প্রত্যেক খরচের হিসেব বিল সহ প্রতিষ্ঠানে এবং ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে।

জেনে নিন আবেদন করার পদ্ধতিঃ

• পড়ুয়াদের ঠিকানার প্রমাণপত্র লাগবে।

• তাঁর পরিবারের মোট আয়ের প্রমাণপত্র লাগবে।

• মার্কশিট লাগবে।

• অভিভাবকের আধার কার্ড লাগবে।

• প্যান কার্ড অথবা পাসপোর্টের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে।

• আধার কার্ড, মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল আইডি থাকতে হবে।

• আবেদনকারীর মা বাবা এবং আবেদনকারীর নিজের রঙিন পাসপোর্ট ছবি লাগবে।

• প্যান কার্ডে না থাকলে নির্দিষ্ট ফর্ম্যাটে অঙ্গীকার পত্র লিখে দিতে হবে।

• আবেদনকারীর অভিভাবকের ঠিকানা প্রমাণ পত্র দিতে হবে।

• আবেদনকারী ও অভিভাবকের ব্যাংকের পাস বই প্রথম পেজের জেরক্স দিতে হবে।

• ব্যাংক বইয়ের ৬ মাসের স্টেটমেন্ট আবেদনপত্রের সঙ্গে দিতে হবে।

• আবেদনকারীর ভর্তির প্রমাণপত্র দিতে হবে।

• পরিবারের ইনকাম সার্টিফিকেট দিতে হবে।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কিভাবে বানাবেন?

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে আবেদন করার সময় এই নথিগুলো লাগবে।

• পড়ুয়াদের ঠিকানার প্রমাণপত্র।

• পরিবারের মোট আয়ের প্রমাণপত্র।

• মার্কশিট।

• অভিভাবকের আধার কার্ড, প্যান কার্ড অথবা পাসপোর্টের জেরক্স।

• ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের শেষ ছয় মাসের স্টেটমেন্ট।

• আপ্পলিকেশনটি রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তর ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবে।

• আবেদন শেষে, এপ্রুভড হলো নাকি রিজেক্ট হলো সেটা মোবাইলে একটি মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এর অসুবিধাগুলি কী কী?

• স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের সুবিধা পেতে স্টুডেন্ট কে এই রাজ্যের বাসিন্দা হতে হবে। যারা অন্য রাজ্য থেকে এখানে এসেছে তারা এর সুবিধা নিতে পারবেন না।

• ক্লাস ১০ এর নীচের কোনো স্টুডেন্ট এই সুবিধা পাবেন না।

• ১০ লক্ষ টাকার বেশি লোন পাবেন না। ১৫ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে।শোধ করতে না পারলে কি হবে সেটা পরিষ্কার নয়। যদিও রাজ্য সরকার গ্যারান্টি দিচ্ছে।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কবে থেকে চালু হয়?

উত্তরঃ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু হয় ৩০ জুন ২০২১।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এর জন্য পরিবারের সর্বোচ্চ বার্ষিক আয় কত?

উত্তরঃ পরিবারের সর্বোচ্চ বার্ষিক আয় ২ লক্ষ টাকার নিচে  হবে।

একজন শিক্ষার্থী কি ক্রেডিট কার্ড পেতে পারে?

উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যয় পেতে পারে। আরো জানতে ব্যাংকে যোগাযোগ করুন।

কেন আমার ছাত্র ক্রেডিট কার্ড আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়?

উত্তরঃ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রত্যাখ্যান হবার কয়েকটি কারণ রয়েছে – যেমন আপনার সিবিল স্কোর খারাপ থাকলে, আপনার একাউন্ট ডিফল্ট থাকলে, আপনার ক্রেডিট স্কোর খারাপ থাকলে, আগের লোন ঠিক সময়ে রিপেমেন্ট না করলে। ইত্যাদি।

স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কিভাবে কাজ করে?

উত্তরঃ কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত মোট লোনের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত খরচ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যার মধ্যে ২০ শতাংশ টাকা খরচ করা যাবে বসবাসের জন্য। প্রত্যেক খরচের বিল ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে।

১৮ বছর হলে কি ক্রেডিট কার্ড পাওয়া যাবে?

উত্তরঃ ক্রেডিট কার্ডের সাথে বয়সের কোনো সম্পর্ক নেয়। আপনার ব্যাঙ্ক অক্কোউন্টে ভালো পরিমান লেনদেন হলেই ব্যাঙ্ক আপনাকে ক্রেডিট কার্ডের জন্য অফার করবে।

কেন আমি ক্রেডিট কার্ড অনুমোদন করতে পারি না?

উত্তরঃ হয়তো আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টা ঠিকমতো জানা নেয়। বা আপনার ক্ৰেডিট হিস্টরি খুবই খারাপ। তাই আপনার নামে ক্রেডিট কার্ড ইস্যু হচ্ছে না। আরো ভালোভাবে জানতে আপনি ব্যাংকে ভিজিট করতে পারেন।

Leave a Reply