Headlines

গীতাঞ্জলি প্রকল্পে হবে এবার নিজের বাড়ি! বিরাট সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার, কিভাবে করবেন আবেদন?

আমার বাংলা ডেস্ক : প্রত্যেক মানুষের কাছে আপন গৃহ বা বাড়ি হলো স্বপ্নের জিনিস। তবে সবাই তেমন সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পারেনা। আর্থিক দুর্বলতার কারণে অনেকের সেই স্বপ্ন। স্বপ্নই থেকে যায়। পশ্চিমবঙ্গে এ ধরনের এমন অনেক পরিবারই রয়েছে যাদের নিজস্ব বাড়ি-ঘর অর্থাৎ আস্তানা নেই। সেইসব আশ্রয়হীন মানুষজনদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে একধরণের অভিনব প্রকল্প চালু করা হয়েছে যার নাম ,”গীতাঞ্জলি প্রকল্প”। এই প্রকল্পের অধীনে থাকা  যে সমস্ত মানুষের মাথার উপর ছাদ নেই, সেই সমস্ত পরিবারকে ছাদ তৈরি করে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবাসন দপ্তর।

• গীতাঞ্জলি প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের বাড়ি করার জন্য আর্থিক অনুদান প্রদান করেছে রাজ্য সরকার।

• গীতাঞ্জলী প্রকল্পের অধীনে শুধুমাত্র গ্রামের মানুষই নয় শহরের মানুষেরা ও এই প্রকল্পের আওতায় থেকে সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

• উপভোক্তার নিজস্ব জমি থাকলে বিনামূল্যে মাথার উপর ছাদ তৈরি করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার।

• যাদের নিজস্ব জমি নেই তাঁদের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার গ্রুপ হাউসিং-এর ব্যবস্থা করে থাকে।

• রাজ্য সরকার ৭০,০০০ টাকা সমতল এলাকায় বাড়ির জন্য এবং ৭৫,০০০ টাকা পার্বত্য অঞ্চলে বাড়ি তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে । এছাড়াও সুন্দরবন এলাকায় বাড়ি তৈরির কাজকেও এই প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ।এই টাকা ধার হিসেবে দেওয়া হয় না। এটা সরকার কেবলমাত্র গৃহহীন মানুষদের সাহায্যার্থে প্রদান করে থাকে অর্থাৎ এই টাকা উপভোক্তাকে ফেরত দিতে হবে না।

• পশ্চিমবঙ্গ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রথম কিস্তি হিসাবে সুবিধাভোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭০% টাকা জমা দেওয়া হবে এবং অবশিষ্ট ৩০% টাকা দ্বিতীয় কিস্তিতে উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে।

• গীতাঞ্জলি প্রকল্পের হাত ধরে বহু মানুষ এক সুনিশ্চিত আশ্রয় পাচ্ছে।

• যদি সরকারের কোনও প্রোজেক্টের জন্য কিছু ভাঙতে হয় বা কোনও বাড়ি যদি ভেঙে ফেলতে হয় বা কোনও ক্ষতি হয়, তাহলেও পুনর্বাসনের জন্য এই গীতাঞ্জলী স্কিমের আওতায় সরকারের তরফ থেকে বাড়ি পাওয়া সম্ভব।

• যেহেতু গীতাঞ্জলি প্রকল্পের মাধ্যমে শুধু গ্রাম নয় শহরের মানুষও এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার অধিকারী সেহেতু আপনার যদি মাথার উপর ছাদ না থাকে তাহলে আপনিও সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পেশ করে এই প্রকল্পের আওতায় এসে এর সকল সুবিধা লাভ করতে পারবেন।

• প্রত্যেক গৃহহীন মানুষকে সুবিধা প্রদান করার জন্য প্রতি জেলা থেকে একজন করে জেলাশাসক এবং অতিরিক্ত একজন জেলাশাসক পুরো বিষয়টা তদারকি করছেন যাতে এই প্রকল্পের সুবিধাসমূহ প্রত্যেকের কাছে সহজেই পৌঁছে যেতে পারে।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য যোগ্যতা :

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বসবাসকারী যেসব মানুষজনদের বাড়িঘর নেই তারা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে নিম্নে উল্লেখিত এই যোগ্যতাগুলি প্রযোজ্য:

• গীতাঞ্জলী প্রকল্পে আবেদনের জন্য সুবিধাভোগীর পারিবারিক মাসিক আয় ৬০০০ টাকা বা তার কম হতে হবে।

• গৃহহীন তবে জমি রয়েছে এরকম পরিবারই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন।

• যিনি আবেদনকারী তাঁকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।

• পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী প্রত্যেকটি দরিদ্র মানুষ যাদের বাড়ি নেই ; বিশেষত যারা বন্যার কারণে বা বেড়িবাঁধের কবলে পড়ে গৃহহীন, তারা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন করতে পারেন।

আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি :

• পশ্চিমবঙ্গের গীতাঞ্জলি আবাস যোজনার জন্য আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সাথে সাথে অবশ্যই তাঁর আধার কার্ড থাকা একান্ত বাঞ্ছনীয়।

• এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী ব্যক্তির ভোটার কার্ড থাকাও বাধ্যতামূলক।

• সুবিধাভোগীর জন্য দুটি পাসপোর্ট আকারের ছবি থাকাও বাধ্যতামূলক।

• এছাড়াও তাঁকে আয়ের শংসাপত্র জমা দিতে হবে।

• পশ্চিমবঙ্গের গীতাঞ্জলি আবাস যোজনার জন্য আবেদনকারী ব্যক্তি যদি বিপিএল পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হন, তাহলে তাঁর কাছে সেই সংক্রান্ত একটি শংসাপত্র থাকা বাধ্যতামূলক ।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য কার সাথে যোগাযোগ করবেন :

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের আবেদনের জন্য আবেদনকারীকে জেলাস্তরের SDO (মহকুমা শাসক) এবং BDO (ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক) অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। প্রতি জেলার জেলাশাসক এবং একজন অতিরিক্ত জেলাশাসক (এডিএম) এই সমগ্র প্রকল্পের তদারকি করছেন।

এনারাই উক্ত প্রকল্পের জন্য বিস্তারিত তথ্য প্রদান এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা করে থাকেন।

পশ্চিমবঙ্গের গীতাঞ্জলি আবাস যোজনার সুবিধা পেতে আপনাকে প্রথমে এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট দেখতে হবে। অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটি নিম্নে উল্লেখিত হল:

https://www.wbhousing.gov.in/pages/display/399-gitanjali-housing-scheme

• অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যাওয়ার পর সুবিধাভোগীকে ‘গীতাঞ্জলি আবাস যোজনা’ বিভাগে গিয়ে আবেদনপত্রে ক্লিক করতে হবে।

• ফর্মে ক্লিক করার পর উপভোক্তাকে তাঁর সমস্ত তথ্য যত্নসহকারে পূরণ করতে হবে।

• সমস্ত তথ্য পূরণ করা হয়ে গেলে উক্ত ফর্মটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জমা দিতে হবে।

 

পশ্চিমবঙ্গের গীতাঞ্জলি আবাস যোজনার সুবিধা কি?

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অধীনে রাজ্যের দরিদ্র এবং অসহায় মানুষ যাদের জমি আছে কিন্তু বাড়ি নেই, তারা বাড়ি করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আর্থিক অনুদানের সুবিধা পাবে।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অধীনে বাড়ি করার জন্য কত টাকা আর্থিক সুবিধা পাওয়া যাবে?

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের অধীনে সমতল এলাকায় বাড়ি করার জন্য ৭০ হাজার টাকা এবং দুর্গম ও পাহাড়ি অঞ্চলের জন্য ৭৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেবে রাজ্য সরকার।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবে?

যাদের পারিবারিক আয় মাসিক ৬ হাজার টাকা বা তার কম এবং যাদের জমি রয়েছে তারা বাড়ি করার জন্য আবেদন করতে পারবে।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য কোথায় যোগাযোগ করতে হবে?

গীতাঞ্জলি প্রকল্পের জন্য SDO এবং BDO Office এ যোগাযোগ করতে হবে।

পশ্চিমবঙ্গের বাইরের লোকজন গীতাঞ্জলি প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারে?

না, এই প্রকল্প টি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা একটি প্রকল্প যা শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের উদ্দেশ্যে ই রূপায়িত।

Leave a Reply