আমার বাংলা ডেস্ক : আমাদের রাজ্যে এমন অসংখ্য প্রত্যন্ত এলাকা রয়েছে যেখানে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে করতেই রোগীর ভালো-মন্দ যেকোনও কিছুই হয়ে যেতে পারে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গে এক যোগে তাই রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ বিভিন্ন জেলায় চালু করেছে জরুরি পরিবহন পরিষেবা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেণায় তৈরি রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পের নাম ‘নিশ্চয় যান’ (Nischay Yan) প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল জরুরি ভিত্তিতে রোগীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছে দেওয়া। একটি টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করলেই মিনিট ২৫ এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স এসে হাজির হবে রোগীর বাড়ির দোরগোড়ায়। এই প্রকল্পেরই আরেকটি ভাগ ‘মাতৃযান প্রকল্প’, প্রসূতি মায়েদের জন্য এই প্রকল্পের সূচনা করা হয়।
নিশ্চয় যান প্রকল্পের উদ্দেশ্য –
রাজ্যে রোজই কোথাও না কোথাও পথ দুর্ঘটনা ঘটেই থাকে। দুর্ঘটনা পরবর্তীতে সময়ে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছনোর উপরেই অনেকক্ষেত্রে বাঁচা মরা নির্ভর করে থাকে। সেই সময় অ্যাম্বুলেন্স খোঁজা, ভাড়া ঠিক করা সব মিলিয়ে অনেকটা সময় লেগে যায়। আর ততক্ষণে রোগীর প্রাণ ওষ্ঠাগত। এমন সিরিয়াস সময়ে নিশ্চয় যান হাইজির হবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে, এবং জখম বা আহত রোগীকে নিয়ে যাবে নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জেলায় একাধিক নিশ্চয় যান অ্যাম্বুলেন্স চালু হয়েছে।
মাতৃযান প্রকল্পের উদ্দেশ্য-
২০১১ সালে মাতৃযান প্রকল্পের সূচনা করেছিল রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যের প্রত্যেক প্রসূতি মহিলাই প্রসবের আগে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য এবং ডেলিভারির পর হাসপাতাল থেকে ফেরার জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পাবেন। শিশুর ২৮ দিন বয়স পর্যন্ত চিকিৎসার জন্য মা ও শিশুর হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও নিখরচায় ‘মাতৃযান’ পাওয়া যাবে। এছাড়াও এখনও গ্রামে গঞ্জে বহু জায়গায় কোনও চিকিৎসকের সাহায্য ছাড়াই ডেলিভারি করানো হয়, এর জেরে মা এবং সদ্যোজাত উভয়েরই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
মাতৃযান বা নিশ্চয় যান কী ভাবে পাবেন?
টোল ফ্রি হেল্পলাইন নম্বর ‘১০২’এ ফোন করলেই জেলায় মাতৃযান বা নিশ্চয় যান পরিষেবা সম্পর্কে জানা যাবে। দু’ধরনের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হবে এই প্রকল্পে। বেসিক লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স বা বিএলএস এবং অ্যাডভান্সড লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স বা এএলএস। বিশেষত সরকারি হাসপাতালগুলিতেই এই অ্যাম্বুলেন্স থাকবে। রোগীর ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট স্থানে।