Headlines

PM PRANAM প্রকল্প কী? কারা এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারেন? জানুন বিস্তারিত

আমার বাংলা ডেস্ক : দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করার সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছে কেন্দ্র সরকার। কী ভাবে ফলন বৃদ্ধি করে কৃষকরা বেশি আয় করতে পারেন সেই দিকে নজর দিচ্ছে মোদী সরকার। একই সঙ্গে বিভিন্ন সারের উপযুক্ত ব্যবহারের (Judicious Utilisation Of Fertilisers) দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এই জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চালু করেছে PM Promotion of Alternate Nutrients for Agriculture Management Yojana বা PM-PRANAM। এর মাধ্যমে লাভবান হবেন দেশের কৃষকরা।

এতদিন ইচ্ছেমত সারের ব্যবহার করেছেন কৃষকরা। যার ফলে, উৎপাদন বৃদ্ধির জায়গায় ফসল উৎপাদন কমেছে, জমির ভূমিক্ষয় হয়েছে, বেড়েছে জমির লবণের পরিমাণ, এরই সঙ্গে কমেছে উর্বরতা। তাই রাসায়নিক সারের পরিবর্তে বিকল্প সার ব্যবহার করার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে।

কী এই পিএম-প্রণাম প্রকল্প?

‘প্রোমোশন অব অল্টারনেটিভ নিউট্রিয়েন্টস ফর এগ্রিকালচারাল ম্যানেজমেন্ট’ – এই এত বড় নামটিকে ছোট করে বলা হয় ‘প্রণাম’ (PRANAM)। রাসায়নিক সারের সুষম ব্যবহার এবং বিকল্প সারের ব্যবহার বাড়াতে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে উৎসাহ দিতে এই প্রকল্প চালু করল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করার সময় এই প্রকল্পটির কথা ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ২০২২-এর সেপ্টেম্বরে, ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচার ফর রবি ক্যাম্পেইন’-এ প্রথম বিকল্প সারের ব্যবহার বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই নয়া প্রকল্প চালুর ফলে, রাসায়নিক সারের ক্ষেত্রে ভর্তুকির বোঝা কমবে বলে আশা করছে কেন্দ্র।

এই প্রকল্পের অধীনে, ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে, সরকার রাসায়নিক সারের ভর্তুকি হিসাবে ১.০৫ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই ভর্তুকির টাকা থেকে যে রাজ্যগুলি অর্থ বাঁচাতে পারবে, তারা তাদের বাঁচানো ভর্তুকির ৫০ শতাংশ অনুদান হিসাবে ফেরত পাবে। এর ৭০ শতাংশ সম্পদ তৈরি এবং বিকল্প সার ব্যবহারের জন্য ব্যবহার করতে হবে। বাকি ৩০ শতাংশ দিতে হবে স্থানীয় পঞ্চায়েত, কৃষি গোষ্ঠী এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে। এই অনুদানের মাধ্যমে এই স্থানীয় সংস্থাগুলিকে বিকল্প সার ব্যবহারের জন্য উৎসাহ দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রকের আওতায় এই প্রকল্প চালু করা হল। এই প্রকল্প চালুর পর, দেশে রাসায়নিক সারের ব্যবহার কতটা কমে, সেটাই দেখার।

পিএম-প্রণাম প্রকল্পের উদ্দেশ্য

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল অতিরিক্ত সারের ব্যবহার কমানো। কৃষকদের সচেতন করা। তাঁরা যাতে উপযুক্ত এবং পরিমাণমত সার ব্যবহার করে বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারেন সেই জন্য সেচেতন করা। এই কাজে চাষিদের উৎসাহিত করার জন্য ‘সাবসিডি’ দেওয়ার সঙ্গে পরিবেশ বান্ধব কৃষি জমি তৈরি করাও হচ্ছে। পিএম-প্রণাম প্রকল্পের লক্ষ্য রাসায়ানিক সারের ব্যবহার কম করা। ২০২১ সালে এই ক্ষেত্রে ব্যয় হয় ১.৬২ লাখ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ সালে তা প্রায় ৩৯ শতাংশ বেড়ে ২.৩৫ লাখ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এখন সারের ক্ষেত্রে যে অনুদান বা ভর্তুকি পাওয়া যায় তার তুলনায় কিছুটা আলাদা এই প্রকল্প।

পিএম-প্রণাম প্রকল্পের সুবিধা কী কী ?

সাবসিডির জন্য যে সঞ্চয় হবে তার মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ রাজ্যের অনুদান বা অনুদান হবে। রাসায়নিক সারের ব্যবহার করার পরিবর্তে বিকল্প সার ব্যবহার করার দিকে জোর দেওয়া হবে। এই রাজ্যগুলিকে যে ফান্ড দেওয়া হয় তার ৭০ শতাংশ ব্যবহার করা যাবে ওই সারের উৎপাদন এবং ব্যবহারের এলাকা বৃদ্ধি করার জন্য। জেলা স্তর থেকে একেবারে গ্রাম স্তরে এই কাজ করা হবে। ফান্ডের বাকি ৩০ শতাংশ ব্যবহার করা যাবে কৃষক, গ্রাম পঞ্চায়েত, এলাকার স্বসহায়ক দলগুলিকে বিকল্প সার ব্যবহার করা নিয়ে উৎসাহ বৃদ্ধি করার কাজে।

চলবে নজরদারিও

এই কাজ একেবারে গ্রামস্তর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই কাজ ঠিক মত হচ্ছে কী না তা তিন বছর ধরে পর্যালোচনা করা হবে। Integrated Fertiliser Management Systemএর মাধ্যমে দেখা হবে এই সারের ব্যবহার কেমন করা হচ্ছে।

কেন এই প্রকল্প?

ইউরিয়া, ডিআই অ্যামোনিয়াম ফসফেট, সহ বিভিন্ন রাসায়ানিক সারের ব্যবহার ২১০৭-১৮সালের তুলনায় ২০২১-২২ সালে বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। তাই বিকল্প সার ব্যবহার করার দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। ২০২২-২৩ সালে এই ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা হয়েছে ১.০৫ লাখ কোটি টাকা। কিন্তু সারের ক্ষেত্রে অনুদান বৃদ্ধি পেয়ে ২.৩৫ লাখ কোটি টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সার মন্ত্রী।

Leave a Reply